বাংলার মাটিতে আর হরতাল হবে না: কৃষিমন্ত্রী

স্বাস্থ্য


বঙ্গবন্ধুকে ৭৫-এর ১৫ আগস্ট হত্যা করে খুনিরা ভেবেছিলো বাঙালী আর কোন দিন মাথা তুলে দাঁড়াবে না এবং জাগবে না। কিন্তু শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে জাতির পিতা কন্যা যার ধমনীতে বঙ্গবন্ধুর রক্ত শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ বাঙালী শুধু জাগেইনি পৃথিবীতে শান্তির প্রগতির সমৃদ্ধির অগ্রপ্রতীক হিসেবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ নেতারা।

সোমবার বিকালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী ও কৃষিমন্ত্রী কৃষিবিদ ড. আব্দুর রাজ্জাক এসব মন্তব্য করেন।

এ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী বলেন, সবাই ভেবেছিলো রোহিঙ্গাদের চাপ আওয়ামী লীগ সরকার কুলাতে পারবে না। সেখানেও তিনি সফলতা ও দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছেন। বিএনপি সরকারের আমলেও এই রোহিঙ্গাদের একটি অংশ এসেছিলো। বর্তমানের তুলনায় সেটা ১০ ভাগের এক ভাগ হবে। তখন প্রধানমন্ত্রী ছিলো বেগম খালেদা জিয়া। আমি অনুরোধ করবো সেই সময়কার সরকারি ছবি দেখুন। সেখানে গিয়েছিলো বেগম সাহেব। তখন একটা বাচ্চাকে নতুন কাপড় পড়িয়ে উনার কোলে তুলে দেয়া হয়েছিলো। উনি শুধু ছবি তুলেই চলে এসেছিলেন। আর আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন সেই কক্সবাজার টেকনাফে যান, সেখানে আমরা দেখেছি ধূলি ধুসর একটি রোহিঙ্গা ছেলেকে পরম মমতায় জড়িয়ে ধরেন তিনি। এটাই হলো শেখ হাসিনা। যখন শেখ হাসিনার হাতে দেশ পথ হারাবে না বাংলাদেশ। পথ হারাবে না কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র জনতা, সাধারণ মানুষ।

তিনি আরও বলেন, করোনায় যখন সারা পৃথিবী ধুকে ধুকে নিঃশ্বাস নিচ্ছে, সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা করোনাকে অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে মোকাবেলা করছি। করোনার সময় প্রত্যেকের ঘরে খাবার ও সাহায্য সহযোগিতা পৌঁছে দিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষদের বিকাশের মাধ্যমেও সহযোগিতা পাঠানো হয়েছিলো। এটাই হলো পরম মমতায় জনগণের পাশে দাঁড়ানোর একটি চিত্র। এটা শুধু জাতির পিতা কন্যা শেখ হাসিনার পক্ষেই সম্ভব।

এ সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের অপর প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, যারা ষড়যন্ত্র করছে নির্বাচন কমিশন মানে না, ইলেকশন করবেন না, আবার গাড়ি পোড়াবেন, মানুষকে দগ্ধ করবেন, পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করবেন। তাদেরকে বলে দিতে চাই ৭১ সালে আমরা আপনাদেরকে মোকাবেলা করেছি। ২০১৩, ২০১৪, ২০১৫ সালে মোকাবেলা করেছি। আবার ইনশাল্লাহ এই কৃষকলীগ আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক ভাবে আপনাদের মোকাবেলা করবে। বাংলার মাটিতে আর হরতাল হবে না। কাউকে হত্যা করতে পারবেন না।

দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, করোনা মহামারি সত্ত্বেও দেশে কোন খাদ্য সংকট, কোন আহাজারি নেই। গত এক দেড় মাস আগে আমি খোঁজ নিয়েছি কোনো মোটা চালের দাম বাড়েনি। তেল বিদেশ থেকে আনতে হয় এর জন্য তেলের দাম কিছুটা বেড়েছে। আমরা তেলের দাম নিয়ন্ত্রণ করি না, ৯০ ভাগ তেল বিদেশ থেকে আনতে সরকারকে ২০ হাজার কোটি টাকা খরচ করতে হয়। আর এ গুলো আনে বেসরকারি কোম্পানি গুলো। তারা লাভ না হলে আনবে না। এছাড়া সারা পৃথিবীতেই ট্রাক ভাড়া, জাহাজ ভাড়া বেড়েছে।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি সরকারের সময় সারের শুধু অভাব হয়নি। সার চাইতে গিয়ে এদেশের কৃষক জীবনও দিয়েছেন। ১৮ জন কৃষককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এই বুলেটের জবাব এদেশের কৃষক শ্রমিক জনতা ব্যালটের মাধ্যমে দিয়ে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় এনেছে।

কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সমীর চন্দ্র চন্দের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতি এমপি, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহসভাপতি শরীফ আশরাফ আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক নুরে আলম সিদ্দিক, গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান, জেলা কৃষক লীগের সভাপতি মো. লুৎফর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি মিলন মোল্লাসহ কেন্দ্রীয় কৃষকলীগ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

আলোচনা সভা শেষে দোয়া, মোনাজাত ও জন্মদিনের কেক কাটেন কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। এর আগে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান।


বাংলাদেশ জার্নাল/কেএ