গত ১৩ মার্চ চট্টগ্রামের হালিশহরে ৫ম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক কিশোরীকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করে আলমগীর মিয়া (৪৯) নামের এক ব্যক্তি। ধর্ষণের পর হত্যা করে পরিবার নিয়ে মানিকগঞ্জে আত্মগোপনে ছিলো আলমগীর।
বুধবার (১৬ মার্চ) সকালে মানিকগঞ্জের ধামরাই থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। শিশুটিকে ধর্ষণের পর গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরপর মরদেহ বাসার খাটের নিচে রাখে। গ্রেপ্তারের পর র্যাবের কাছে হত্যা ও ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে আলমগীর।
দুপুরে কারওয়ানবাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনের র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গত ১৩ মার্চ চট্টগ্রামের হালিশহরে ৫ম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক কিশোরীকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যার ঘটনা ঘটে। ১৪ মার্চ ওই শিশুর বাবা বাদী হয়ে হালিশহর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
র্যাব জানায়, র্যাব সদরদপ্তর গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-৭ এর অভিযানে বুধবার সকালে মানিকগঞ্জে অভিযান পরিচালনা করে প্রধান আসামি আলমগীর মিয়াকে (৪৯) গ্রেপ্তার করা হয়। তার গ্রামের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে।
খন্দকার মঈন বলেন, ভিকটিম শিশুর বাবা পেশায় রিকশাচালক। মা পোশাক কারখানার কর্মী। ঘটনার দিন সকালে ভিকটিম কোচিং শেষে বাসায় আসে। তখন আলমগীর তাকে বাসায় ডেকে নেয়। শিশুটিকে ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে শিশুটির গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। লাশটি বাসার খাটের নিচে রাখে।
গ্রেপ্তার আলমগীরকে জিঙ্গাসাবাদে র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, শিশুটিকে খুন করে আলমগীর তার স্ত্রীর পোশাক কারখানায় যায়। সে তার স্ত্রীকে জানায়, এলাকার একজনের মারামারি হয়েছে। পুলিশ আসবে, দ্রুত বাসা ছেড়ে চলে যেতে হবে। এরপর তারা চট্টগ্রাম ছেড়ে চলে আসে।
র্যাব মুখপাত্র বলেন, মেয়েকে না পেয়ে খুঁজতে থাকে তার বাবা মা। তারা দেখতে পায় আলমগীরের বাসা তালা দেয়া, তার স্ত্রী গার্মেন্টস থেকে খেতেও আসেনি। এতে সন্দেহ হয়। এমনকি আলমগীরকে ফোন করলে তার মোবাইলটিও বন্ধ পাওয়া যায়। বিষয়টি বাড়ির মালিককে জানালে তিনি ঘটনাস্থলে আসেন। রাত সাড়ে ৯ টার দিকে আসামির ঘরের খাটের নিচে শিশুটির লাশ পাওয়া যায়। ভিকটিমের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ও ধর্ষণের আলামত দেখতে পান তারা।
গ্রেপ্তার আলমগীরের বিষয়ে র্যাব কর্মকর্তা মঈন বলেন, সে একসময় সাভারের একটি গার্মেন্টসে ডিজাইনের কাজ করতো। পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারণে সে সাভার থেকে তিন মাস আগে দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে চট্টগ্রামের হালিশহর বসবাস শুরু করে। বেকার থাকায় সে সারাক্ষণ বাসায় অবস্থান করতো।
আগেও তার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ রয়েছে। ঘটনার পর সে পালিয়ে প্রথমে ধামরাই পরবর্তীতে সাভার, মানিকগঞ্জ ও রাজবাড়ী এলাকায় আত্মগোপন করে বলেও জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ জার্নাল/এফজেড/এমএস