দেবীদ্বারে চুরির অপবাদে যুবকের আত্মহত্যা

স্বাস্থ্য


কুমিল্লা দেবীদ্বারে ট্রাক চালক মো. লিটন ওরফে আবু বক্কর (২৪) নামে এক যুবককে সেচ পাম্প চুরির অভিযোগে মারধর কারার পর অভিমানে কেরির ঔষধ খেয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

মঙ্গলবার দুপুরে দেবীদ্বার উপজেলার ভানি ইউনিয়নের রাধানগর গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে। নিহত মো. লিটন (আবু বক্কর) মৃত আবুল কাশেমের পুত্র। নিহত বিবাহিত এবং তিন বছরের তার একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। পেশায় সে পরিবহন শ্রমিক ছিলেন।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, একই গ্রামের মৎস প্রজেক্টের মালিক কলিম উদ্দিনের পুত্র আলমগীর হোসেনের প্রজেক্ট থেকে প্রায় দশ হাজার টাকা মূল্যমানের একটি সেচ পাম্প চুরি হলে তিনি মঙ্গলবার দুপুরে মো. লিটন ওরফে আবু বক্করের বড় ভাই রিপন মিয়াকে সঙ্গে নিয়ে প্রথমে নিহতের বাড়িতে জিজ্ঞাসাবাদ করতে যান। সেখানে তাকে প্রচণ্ড চাপ প্রয়োগ করে সেচ পাম্পটি ফিরিয়ে দেয়ার জন্য বলেন। তবে নিহত লিটন এ বিষয়ে অভিযোগ অস্বীকার করলে মারধর করতে উদ্যত হয় এবং এক পর্যায়ে তাকে আলমগীর হোসেন বাড়িতে নিয়ে আসে।

নিহতের বড় ভাই রিপন মিয়া জানান, আমার উপস্থিতিতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদে সে চুরির ব্যাপারটি অস্বীকার করে তখন আলমগীর হোসেন বাঁশ নিয়ে একাধীকবার মারতে উদ্যত হয়। তবে এক পর্যায়ে আমি তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করব বলে বাজারে চলে যাই এবং বাজার থেকে ফিরে শুনি তাকে আলমগীর তার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে প্রচণ্ড মারধর করেছে। কিছুক্ষণ পরে বাড়ির পাশে ব্রিজের গোড়ায় সে ছটফট করতে দেখে কয়েকজন খবর দিলে তাকে প্রথমে রায়পুরের বিশেষায়িত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে চান্দিনা সরকারি হাসপাতাল এবং পরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কুচাইতলি নিয়ে গেলে এক ঘণ্টা পর রাত্র ৭.৩০ মিনিটের দিকে ডাক্তার তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে।

পরে লাশ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, আমার ভাই অভিমান করে নিজেই কেরির ঔষধ খেয়েছে নাকি জোর করে খাওয়ানো হয়েছে তা বলতে পারছি না।

এ বিষয়ে আলমগীর হোসেন বলেন, আমার একটি সেচ পাম্প চুরি হলে একাধিক ব্যক্তি জানায় লিটনকে নাকি আমার প্রজেক্টে ঘুরাঘুরি করতে দেখেছে। তাই তাকে আমি জিজ্ঞাসাবাদ করেছি মাত্র তেমন কোন মারধর করি নাই।

এ সময় তিনি আরও বলেন, নিহত লিটনের বিরুদ্ধে আগেও একাধিক চুরির অভিযোগে আমরা তার বিচার শালিস করেছি।

এ বিষয়ে দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আরিফুর রহমান জানান, এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত থানায় কেউ অভিযোগ করে নাই, অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।


বাংলাদেশ জার্নাল/কেএ