অন্তত ২০ জন কর্মী দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রকে পেটানোর অভিযোগ ওঠেছে জগন্নাথ হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক অতনু বর্মণের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার সোয়া ১১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়স্থ উদয়ন স্কুলের সামনে অবস্থিত স্বাধীনতার সংগ্রাম ভাস্কর্যের পাদদেশে এই ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানান ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী রাকিবুল হাসান সজীব। ঘটনার পর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন তিনি।
রাকিবুল সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলে থাকেন তিনি। ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, স্বাধীনতার সংগ্রাম ভাস্কর্যের পাদদেশ হয়ে বাইক নিয়ে আসার সময় আমার এক বন্ধু হাফিজ আমাকে ডাক দেয়। আমি বাইকে ইউ-টার্ন নেয়ার সময় জগন্নাথ হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক অতনু বর্মণ তার অনুসারীদের নিয়ে বাইক বহরে আমার সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন। ওইসময় একটি সম্ভাব্য সংঘর্ষ এড়িয়ে আমি বাইক থামিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে যাই। তখন উনারা আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করলে আমি প্রত্যুত্তরে বলি, ‘এই ভাই, খাঁড়ান!’
ভুক্তভোগী বলেন, ওই সময় অতনু তার সহচরদের বলে উঠেন, ‘এই শালারপুতরে মার!’ এর পরপরই হঠাৎ করে উনার প্রায় ২০ জন অনুসারী আমাকে এলোপাথারি মারতে শুরু করে। তখন আমি ক্যাম্পাসের ছাত্র পরিচয় দিলেও তারা থামেনি। আমার বন্ধু হাফিজও ওদের থামানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়।
তিনি আরও বলেন, তারা (অতনুর অনুসারীরা) আমাকে মারতে মারতে এস এম হলের দেয়াল পর্যন্ত আনেন। হামলায় আমার কানের পাশে ছিঁড়ে যায়, মাথা, চোখ ও গলাসহ শরীরের আরও বিভিন্ন জায়গায় গুরুতর আঘাত লাগে। পরে আমার দুইজন বন্ধু ঘটনাস্থল থেকে আমাকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করে।
এসময় রাকিবুল জানান, ঘটনার বিষয়ে পরামর্শ করে শীগ্রই তিনি অফিশিয়াল অভিযোগের ব্যবস্থা নেবেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রত্যক্ষদর্শী বাংলাদেশ জার্নালকে জানান, মারধরের ঘটনাটি সত্যি। জগন্নাথ হলের অনেকেই একসাথে মিলে এগ্রেসিভ হয়ে ভুক্তভোগীকে হিট করে। পরে তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করা হয়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা অতনু বর্মণের সাথে কথা হয় বাংলাদেশ জার্নালের। শুরুতে ঘটনার কথা পুরোপুরি অস্বীকার করলেও পরে বাকবিতণ্ডার কথা স্বীকার করেন তিনি। ঘটনার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে অতনু বলেন, এরকম তো কোনো ঘটনা ঘটেনি! আমার হলে কালকে টুর্নামেন্ট আছে। আমি নিজেই তো আজকে সারাদিন ব্যস্ত আছি। টুর্নামেন্ট নিয়ে অনেক দৌড়াদৌড়িতে আছি।
পরে ভুক্তভোগীর অভিযোগ ও প্রাথমিক চিকিৎসার কথা উল্লেখ করলে তিনি বলেন, তার সঙ্গে আমার শুধু মুখে তর্কাতর্কি হয়েছে। তর্কাতর্কি বলতে সে প্রথমে আমাকে চিনতে পারেনি। এরপরে কথা বাদে আর কিছু হয়নি। সে যেহেতু আমার ক্যাম্পাসের জুনিয়র, সে আমাকে পরে ‘সরি’ বলেছে। এরপর ব্যস্ততার কারণে আমিও চলে আসি, সেও চলে যায়। তার উপরে কোনো ধরণের হামলা করা হয়নি।
উল্লেখ্য, ছাত্রলীগের হল কমিটি দেয়ার সময় থেকে অতনু মাস দুয়েক হলের দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের অনুসারী।
বাংলাদেশ জার্নাল/কেএ